আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ছেলেকে শুনলাম আত্নহত্যা করেছে। তা সে করতেই পারে!!!
জীবনটা যদি শুধুই তার হতো তাহলে নিজের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার তার থাকতেই পারে।
আমি তারে চিনি না, জানি না, কখনো দেখিওনি। কিন্তু এই অচেনা অজানা ছেলেটার জন্যে আমার আজ সারাটা বিকেল মন খারাপ ছিল।
যারা তার আপনজন, যারা তার আত্নার মানুষ… তাদের এখন কেমন লাগছে তা ভাবলেই কেমন জানি কান্না পায়। আমাদের এ জীবনটা সত্যিই কি শুধু একা আমাদের?
আচ্ছা, মানুষ কখন নিজেকে মেরে ফেলে? যখন মানুষ মরে গিয়ে বেঁচে থাকতে চায় তখন, তাই না!
একটা মানুষ যখন নিজেকে এ পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে চায় তখন তার কেমন লাগে আমি জানি না, তবে এটুকু বলাই যায় এ পৃথিবীর কোনোকিছুর প্রতিই তখন তার আর বিন্দুমাত্র মায়া থাকে না, ভালোবাসা থাকে না।
মানুষ জন্মগতভাবেই এক আকাশ অভিমান নিয়ে জন্মেছে। মানুষ চায় অন্যেরা তাকে বুঝবে ঠিক তার মতো করেই।
মানুষ চায় অন্যেরা তারে ভালোবাসবে ঠিক তার মতো করেই। মানুষ চায় অনেক; অনেককিছু। আসলেই কি মানুষ অনেককিছু চায়? কিছুকিছু মানুষতো কেবল একটুখানি সুখ চায় জীবনে। তাহলে?
একটুখানি সুখ চাওয়াটাইতো জীবনে অনেক বড় এক চাওয়ার নাম। আপনি পৃথিবী নামক এক গ্রহে
মানুষ হয়ে জন্মেছেন। এখানে সুখ চাইতে নেই। সুখ এখানে দাম দিয়ে কেনা যায় না। সুখ এখানে আবাবিল পাখি। সুখ সবার হয়ও না। আর আপনি কিনা এ সুখ চাচ্ছেন দু হাত ভরে?
আপনারতো মরে যাওয়া উচিত। তবে মরার আগে অই মেয়েটারে একটাবার জিজ্ঞেস করে যান, যে পেটের ভেতরের ক্ষুধা নামের দানবটাকে মারতে প্রতি রাতে নাম না জানা কোনো না কোনো মানুষের বউ হয়।
মরার আগে একটাবার ছোট্ট এতিম বাচ্চাটার কথা একটুখানি চাইলে ভাবতে পারেন। ভাবতে পারেন এ দুঃসময়ে চাকরি চলে যাওয়া আপনার পাশের বাসার মানুষটার কথা- যে সম্মানের ভয়ে আপনার আমার কাছে হাতও পাততে পারছে না।
না হয় ভাবুন- কালো; মোটা সে মেয়েটার কথা; যার চোখে সাগর আছে, সে সাগরে নোনতা জল আছে, সে জলে আবার কষ্টও আছে!
শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের কারণে বারেবারে বিয়ে ভেঙে যাওয়া মেয়েটার চোখের জলের কষ্ট যদি বুঝতে পারেন তাহলে আপনি এখন আমার কথাও বুঝতে পারবেন। শুনুন তাহলে আমার কথা!
তেমন আহামরি কোনো কথা বলবো না। জানি আপনার মনে অনেক যন্ত্রণা। আপনি সে যন্ত্রণা ভুলতে গিয়েও পারছেন না।
না না আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি আপনাকে আপনার পোষা কষ্ট ভুলে যেতে বলছি না। জাস্ট বলছি মরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত যেহেতু নিয়েই ফেলেছেন তো একটাবার কিছু মানুষের জন্যে কিছু কাজ করে যান না!
রাস্তায় শরীর বিক্রি করা মেয়েটার জন্যে দেখুন না বন্ধুরা মিলে কিছু একটা করতে পারেন কিনা। এতিম বাচ্চাটার দেখুন না মা হতে পারেন কিনা, বাচ্চাটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে দেখুন না কেমন লাগে?
পাশের বাসার অইযে অই মানুষটা যার কিনা এ করোনাকালে চাকরি চলে গেছে তার জন্যে কিছু করতে পারেন কিনা একটাবার শেষ চেষ্টা করে দেখুন না! অই আপুটার জন্যে কিছু করা যায় কিনা ঠান্ডা মাথায় একটু ভেবে দেখুন না!
যে মানুষটা নিজেকে মেরে বেঁচে থাকতে চায়; সে চাইলেই অনেক মৃত মানুষকে বাঁচিয়ে তুলতে পারে।
জীবন যদি কখনো আপনাকে মরে যাবার জন্যে একশটা কারণ দেখায় তাহলে আপনি জীবনকে একশ একটা কারণ দেখাবেন বেঁচে থাকার জন্যে।
আপনি কেবল এ পৃথিবীতে আপনার একার জন্যে না। আপনি অনেকের জন্য। যদি এখনো এ কথাটা না বুঝে থাকেন তাহলে প্লিজ মানুষকে সাহায্য করার হাতটা পকেট থেকে বের করে সামনে বাড়িয়ে দিন।
আরে ভাই মরে যাওয়াতো সহজ ব্যাপার। কিন্তু কিছু মৃতপ্রায় মানুষকে বাঁচিয়ে তোলা যে কতো আনন্দের তা যদি আত্নহত্যাকারী অই মানুষগুলো জানতো তাহলে কখনোই নিজেকে শেষ করে দিতো না।
মানুষের হাসিমুখেই লুকিয়ে আছে সুখ। যারা জীবনে সুখ খুঁজে পাচ্ছেন না, জীবনকে অর্থহীন মনে হচ্ছে; দুর্বিষহ মনে হচ্ছে- তারা একটাবার মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর দায়িত্বটা নিন।
দেখবেন অই মানুষগুলোর কষ্টের মাঝে আপনার ব্যক্তিগত যন্ত্রণা সব হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে।
জীবন সুন্দর। জীবন সত্যিই সুন্দর। আর এ সুন্দর খুঁজে পেতে জীবনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে হয়। বেঁচে থাকার রাস্তা খুঁজে নিতে হয়। জীবনকে যাপন নয় বরং উদযাপন করতে হয়।
কষ্টের কাছে জীবনকে উৎসর্গ করে দিতে হয় না। বরং কষ্ট পাওয়া মানুষের কাছে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিতে হয়।
মাহমুদুল হকের অকাল মৃত্যুতে বিইউবিটির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক “মোঃ তানিম-উল-ইসলাম” ব্যাথিত হয়ে এভাবেই লিখেন।
তানজিলা আহমেদ পিংকি ও মাহমুদুল হক একই সাথে বিতর্ক প্রতিযোগিতা করতেন, তানজিলা আহমেদ পিংকি বলেন…
আসলে মনের কথা বোঝানো সম্ভব না !
মাহমুদ ভাই এর সাথে বিপক্ষ দলে কাজ করা এরপর স্টেজ শেয়ার করা তারপর সর্বশেষে একই সাথে রোটারেক্টে কাজ করা !
সব সময় যে মানুষটা অভয় দিতো ! কখনো দেখিনি কারো সম্পর্কে খারাপ বলেছেন কিংবা কারো খারাপ করেছেন !
কিছুদিন আগেও ব্যবসা শুরু করেছিলেন ! বলেছিলেন দেখা করতে আসবে ! আর হয়তো দেখা হবে না মাহমুদ ভাই ! আর কেউ আপা বলেও ডাকবে না আপনার মত !
বলতো “আপা আপনি তো খুব স্ট্রং , ভেঙ্গে যেয়েন না কখনো ! “
সেই মানুষটা এখন নেই আমাদের মাঝে!আর সেই মানুষ এই কাজ করবেন মানতে পারছি না
জানি না কেন আত্মহত্যা উনি করলেন !
কিন্তু হ্যা প্রতিভাবান একজন মানুষকে হারিয়েছি আমরা ! শান্ত সুশীল মানুষ ছিলেন উনি !
হ্যা আমরা আবেগপ্রবন ! আমাদের পুরো জেনারেশন আবেক প্রবণ কিন্তু জীবন অনেক অনেক মুল্যবান !
কস্ট পেলে কারো সাথে মন খুলে বলুন এমন করে জীবন শেষ করে দিয়েন না কেউ ই !
একবার চিন্তা করুন ! আপনি মরে গিয়ে কতটা না ভোলা কস্ট দিচ্ছেন ! হ্যা ভুলে যাবো কিন্তু এমন করে কেন ভুলবো আপনাকে ????
বিইউবিটি প্রতিনিধি – বাংলাকণ্ঠ২৪.কম