টানা দুই মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার মধ্যরাতের পর থেকে পটুয়াখালীর দশমিনার জেলেরা তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ শিকারে নেমে হতাশ হচ্ছেন।
আশা ছিল পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ ধরতে পারবেন। আর সেই ইলিশ বেঁচে ঋণ পরিশোধ করে আবার ঘুরে দাঁড়াবেন।
কিন্তু ইলিশ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরতে হলো জেলেদের। নিষেধাজ্ঞা শেষে যেখানে জালভর্তি ইলিশ মাছ পেয়ে জেলেদের মুখে হাসির ঝিলিক লেগে থাকার কথা, সেখানে অধিকাংশ জেলের মুখ ছিল মলিন।
এদিকে ইলিশ না পাওয়ায় ক্রেতার সমাগম নেই ভোলার মৎস্য ঘাটগুলোতে। হতাশা বিরাজ করছে মৎস্য ব্যবসায়ী ও আড়ৎদারদের মাঝে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ইলিশের আভয়শ্রম হওয়ায় গত পহেলা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার নদীতে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।

নিষেধাজ্ঞা জারি শেষে পহেলা মে মাঝরাতে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকারে নেমে পড়েন জেলেরা।
কিন্তু মাঝরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত নদীতে জাল ফেলে পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মেলেনি। দুই মাসের ধার-দেনা, মহাজনের কাছ থেকে দাদন ও এনজিওর কিস্তি পরিশোধ তো দূরের কথা ট্রলারের তেলের খরচও উঠেনি তাদের।
জেলেরা বলেন, ভাবছিলাম নিষেধাজ্ঞার পর নদীতে গিয়ে অনেক মাছ ধরে ধার-দেনা পরিশোধ করতে শুরু করব। আমাদের দুঃখ দূর হবে।
কিন্তু সেটা আর হলো না। অভিযানের দুই মাস যে ধার-দেনা এবং এনজিওর কিস্তির টাকা বাকী ছিল সেটা এখন পরিশোধ করব কিভাবে।
বরিশাল বিভাগের মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক জানান, আভয়শ্রম শেষে বড় ইলিশ সাগরে চলে গেছে এর জন্য এখন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ সঙ্কট রয়েছে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের ঋতুগুলোতে আলাদা বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর প্রভাবে মৌসুমের আগপিছ হচ্ছে।
বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত ইলিশের তেমন দেখা মিলবে না। গত ছয় মাসের মধ্যে এক দিনও বৃষ্টি হয়নি।
তবে ভারী বৃষ্টিপাত ও পানি বাড়তে শুরু করলে ইলিশের প্রাচুর্য বাড়বে এবং আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সাগর থেকে প্রচুর ইলিশ উঠে আসবে। তখন নদীতে জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকার করতে পারবেন।
সুমাইয়া ইসলাম,নিজস্ব সংবাদদাতা – বাংলাকণ্ঠ২৪.কম