ছোট বেলায় দেখেছি,আমাদের গ্রামের স্কুল মাঠে প্রতি বছর শীতকালে যাত্রাপালা হতো।আমাদের বাড়ির সংগে লাগানো স্কুল।সেই প্রাইমারী স্কুলেই আমাদের শিক্ষা জীবন শুরু।
আমার বাবা ছিলেন ঐ স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক।স্কুল মাঠের যাত্রাপালার নেতৃত্বও দিতেন আমার বাবা।
অভিনয় যাঁরা করতেন,তাঁরা সবাই আমাদের গ্রামেরই মানুষ।আজিজ ভাই,সুবল দা,ইনু চাচা,লক্ষন কাকা,পল্টু কা,আমার সোনা মামা,মনি মামা আরো কতজন ভালো।
প্রমটার ছিলেন রহমান কাকা। শুধু অভিনেত্রী আসতো বাইরে থেকে। তিন/চার মাস ধরে রিহার্সেল চলতো রাতভর।কত রাত যে রিহার্সেল দেখতে দেখতে ভাঙা স্কুল ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নেই।
তারপর যখন দুই বা তিনদিন ধরে যাত্রার চুড়ান্ত মঞ্চায়ন হতো স্কুল মাঠে,কি যে উন্মাদনা আর ভালো লাগা,ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
স্কুল জীবনে আমারও দুই একবার সেই যাত্রা মঞ্চে ওঠার সুযোগ হয়েছে।অভিনয়কে ভালোবাসার শুরু কিন্তু তখন থেকেই।
যাদের নাম উপরে উল্লেখ করলাম,এদের মধ্যে বেশীর ভাগ মানুষই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।
আমি যখন আমার নাট্যদল আরণ্যকে অভিনয় শিখতে শুরু করি,আমার গ্রামের ঐ সহজ সরল মানুষ গুলো আমাকে উৎসাহ দিত,গর্ব বোধ করতো।
এখন আর আমার গ্রামের স্কুল মাঠে যাত্রাপালা হয় না অনেক বছর হলো।আমার অভিনেতা হিসেবে যতটুকু অর্জন,তার শেকড়টা গ্রামের ঐ মানুষ গুলোর হাতেই পোঁতা।
কষ্ট লাগে খুব, কোথা থেকে কোথায় এলাম!!!কিন্তু পরিচয় গুলো মুছে যাচ্ছে কেন???কোথায় আমাদের গন্তব্য????
( বি: দ্র: বেশ কয়েক বছর আগে,গাজী টিভির একটা অনুষ্ঠানে যাত্রার ঢঙে আমরা এই পারফরমেন্সটা করেছিলাম…সাজু,খুশী আর আমি )
যাত্রা পালা থেকে উঠে আসা চঞ্চল চৌধুরী আবেগ আপ্লুত হয়ে এমনটাই পোস্ট করেছেন তার ফেইসবুক পেইজ এ!
নিউজ ডেস্ক – বাংলাকণ্ঠ২৪.কম